প্রতিদিনের রোদবৃষ্টি, ধুলোবালি, দূষণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের ত্বক, বিশেষ করে মুখের ত্বক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নিয়মিত ক্লেনজ়িং-টোনিং-ময়শ্চারাইজ়িংয়ের রুটিন দিয়ে সে ক্ষতি সামাল দেওয়া আমাদের কারোর পক্ষে সম্ভব নয়। তাই দরকার ত্বকের একটু বেশি যত্ন নেয়া। তবে তার জন্য যে আপনার বিরাট কাঠখড় পোড়াতে হবে তাও কিন্তু নয়। একটু সচেতনতা আর একটু সময় দিতে পারলেই আপনার ত্বক থাকবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল এবং তরতাজা।
ত্বক ভালো রাখতে যে সব প্যাক ব্যবহার করবেন-
শসাঃ
ত্বকের যে কোনও প্রদাহ কমাতে শসার ব্যবহার খুবেই প্রচলিত। সেই সঙ্গে চোখের নিচের কালি দূর করতে শসার রস কার্যকর বলে মনে হয় অনেকের। ত্বকে শসার রস ব্যবহার করুন যেকোন প্যাকে, আপনি চাইলে সরাসরিও লাগাতে পারেন।
দুধ/ দই আর মধুঃ
দুধ আর দইয়ে উপস্থিত এনজ়াইম আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে তুলতে দারুণ কার্যকর। আর মধু কাজ করে ত্বকের জন্য প্রাকৃতিক ময়েশ্চরাইজ়ার হিসেবে। এই দু’টি মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে ত্বকে লাগিয়ে নিন এবং ২০ মিনিট রেখে এরপর ধুয়ে নিতে হবে। প্রতিদিন রাতে এই প্যাকটি লাগাতে পারেন। মুখ ধুয়ে নিয়ে অবশ্যই ময়েশ্চরাইজ়ার লাগাতে ভুলবেন না।
পাতিলেবুর রসঃ
লেবুর রস প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবে ত্বকে অনেকেই ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু মনে রাখবেন, সরাসরি লেবুর রস কখনই ত্বকে লাগানো ঠিক না। এর প্রভাবে আপনার ত্বক সাঙ্ঘাতিক সেনসিটিভ হয়ে যাবে এবং তীব্র জ্বালাভাবও টের পেতে পারেন। তাই সরাসরি লেবুর রস ত্বকে না লাগিয়ে তা আপনার ফেস প্যাকের অন্যতম অঙ্গ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। ফ্যাট দুধ, বেসন বা আটা আর লেবুর রসের প্যাক সাধারণত সব ধরনের ত্বকেই ভালোভাবে কাজ করে। তবে লেবুর রস ব্যবহার করার পর অবশ্যই ভালো কোনও ময়েশ্চরাইজ়ার ত্বকে লাগান। তা না হলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাবে।
চন্দনঃ
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে তুলতে চন্দনের কোনও বিকল্প নেই। চন্দনে উপস্থিত টাইরোসিনেস মেলানিনের উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিতে পারে। চন্দনের সঙ্গে আমন্ড পাউডার আর দুধ মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে ত্বকে ব্যবহার করুন, ত্বক একেবারে ঝলমলিয়ে হয়ে উঠবে। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ত্বকে ব্যবহার করা যায়। তবে যাঁরা প্রথমবার চন্দন ব্যবহার করছেন, তাঁরা অবশ্যই একবার প্যাচ টেস্ট করে নিবেন। কারন অনেকের চন্দনে অ্যালার্জি হয়।
টমেটোঃ
টমেটোর লাইকোপিন ত্বকে বয়সের আক্রমণ টিকিয়ে রাখতে দারুণ কার্যকর। তা ছাড়া এর অ্যান্টিঅক্সিডান্ট বাড়িয়ে তোলে ত্বকের উজ্জ্বলতাও। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ফেস প্যাকে টমেটো ব্যবহার করতে পারেন, সেই সঙ্গে খানিকটা ওটমিল মিশিয়ে নিয়ে একটা প্যাক বানিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বক ঝকঝকে পরিষ্কার হয়ে উঠবে। আধ ঘণ্টা পর শুখিয়ে নিয়ে প্যাকটা ধুয়ে ময়েশ্চরাইজ়ার লাগিয়ে নিন। এরপর অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগাতে হবে।
অ্যালো ভেরাঃ
অ্যালো ভেরা পাতা চিরে এর মাঝ থেকে শাঁসটা বের করে নিন। তার মধ্যে হলুদ আর লেবুর রস দিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। এক দিন অন্তর অন্তর ব্যবহার করতে পারেন এই প্যাকটি আপনার ত্বকে। আধ ঘণ্টা রেখে মুখ ধুয়ে আপনার পছন্দের ময়েশ্চরাইজ়ার লাগিয়ে নিন।
গাঁদাফুল আর মধুর ফেস প্যাকঃ
মসৃণ,দাগহীন ত্বক চাইছেন? তাহলে গাঁদাফুলের পাপড়ি পেস্ট করে ত্বকে ব্যবহার করুন। এক টেবিল চামচ পরিমাণ মতো হলেই হবে। তাতে এক চা চামচ দুধের সর আর আধ চা চামচ মধু যোগ করে একটা প্যাক বানান। ভালোভাবে মিশিয়ে মুখে সমানভাবে এপ্লাই করুন। এভাবে 20 মিনিট রেখে তারপর বৃত্তাকার ভাবে আলতো করে কিছুক্ষণ মাসাজ করুন, তারপর ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন। দুধের সরের থাকে ল্যাকটিক অ্যাসিড যা গায়ের রং উজ্জ্বল করে। গাঁদাফুল ত্বকের টেক্সচার ত্বককে মসৃণ করে তোলে আর মধু ত্বককে আর্দ্র রাখে, মুখে বয়সের ছাপও পড়তে দেয় না। hp elitebook 840 g3 price
গাঁদাফুল আর বেসনের ফেস প্যাকঃ
রূপচর্চায় বেসনের ব্যবহার প্রচলিত সেই মা,দাদি থেকে। বেসনের সঙ্গে মেশান গাঁদাফুল আর দুধ। এক টেবিলচামচ গাঁদাফুল বেটে নেওয়া পাপড়ি, এক চাচামচ বেসন, এক চাচামচ কাঁচা দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এবার পরিষ্কার মুখে আর গলায় এই পেস্টটি লাগিয়ে নিন। শুকোনো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর ঠান্ডা জলে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে নিন। সপ্তাহে তিনবার এই প্যাকটি ব্যাবহার করলে আপনার ত্বক চোখে পড়ার মতো নরম, মসৃণ আর উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
মসুরের ডাল এবং চালের গুড়োর ফেস প্যাকঃ
১ চামচ মসুর ডাল এবং ১ চামচ চাল (ভাতের চাল) ধুয়ে পানি ঝরিয়ে ভালো করে রোদে শুকিয়ে নিন। তারপর গুরকরে পানি মিশিয়ে একটা প্যাক তৈরি করে মুখে অ্যাপ্লাই করতে পারেন। এতে আপনার ত্বক মসৃণ আর উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।