ব্রণ দূর করার উপায় ও রূপচর্চা
ব্রণ আমাদের ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয়। সাধারণত ব্রণ ও ব্রণের দাগ নিয়ে বেশি ভোগেন টিনেজার ছেলে মেয়েরাই। বিশেষ করে মেয়েরা এটা নিয়ে বেশি চিন্তিত থাকেন। যার ফলে কত ধরনের প্রডাক্ট ইউজ করে থাকেন, এতে অনেকের ক্ষেত্রে কাজ হয় আবার অনেকের ক্ষেত্রে কাজ হয়না। এসব প্রডাক্টের অনেক সাইড এফেক্টও থাকে। তাই চলুন আজকে যেনে নেই প্রাকৃতিক উপায়ে কিভাবে ব্রন দূর করা যায়।
আসুন যেনে নেই ব্রণ আসলে কিভাবে হয়ঃ
আমাদের ত্বকে তৈল গ্রন্থি রয়েছে যা ব্যাটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হলে এর আকৃতি বৃদ্ধি পেতে থাকে, যার ফলে ওখানে পুঁজ জমা হতে থাকে, পরবর্তিতে তা ধীরে ধীরে ব্রণের আকার ধারণ করে।
প্রাকৃতিক ভাবে মুখের ব্রন দূর করার উপায়ঃ
১) পানি
পানির গুরুত্ব অপরিসীম সর্বত্রই। যা ব্রণ দুর করার ক্ষেত্রেও কম নয়। প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। যা আপনার শরীরের জন্য যেমন ভালো তেমনি আপনার ব্রণকে কমিয়ে আনতেও সাহায্য করবে।
২) মৌসুমি ফল
রাতে খাবারের পর মৌসুমি ফল খাবেন, যা আপনার ত্বককে সতেজ রাখতে সাহায্য করবে। যাদের ব্রণের সমস্যা বেশি এবং এটি নিয়ে বেশ চিন্তিত তারা যতটা সম্ভব তেলযুক্ত বা ফাষ্ট ফুড জাতীয় খাবার পরিহার করুন।
৩) মুখ পরিষ্কার রাখা
সব সময় বাইরে থেকে আসার পর মুখ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এছাড়া হালকা গরম পানির স্টিম নিতে পারেন। এতে করে ত্বকের জমে থাকা ধুলাবালি পরিষ্কার হয়ে যাবে। এবং যখন বাহিরে থাকবেন তখন ও চেষ্টা করবেন যতটা সম্ভব মুখকে পরিষ্কার রাখার।
৪) ব্রণে হাত না দেয়া
আমাদের মধ্যে অনেকেরই নখ দিয়ে ব্রণ খোটার বাজে অভ্যাস রয়েছে। এতে ব্রণের অবস্থা ভালো হওয়ার থেকে আরও খারাপ হয়ে যায়। যার ফলে ব্রণ লাল হয়ে যায়। এমনকি তা ফেটে গিয়ে মুখে দাগের সৃষ্টি করে। ব্রণ না যাওয়া পর্যন্ত মেয়েদের ক্ষেত্রে মেক-আপ ব্যবহার না করাই ভাল। মেয়েরা দিনে অন্তত দুই বার তেল-মুক্ত ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুয়ে নিবেন।
৫) দুশ্চিন্তা না করা
বর্তমানে প্রায় মানুষই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগেন। এই দুশ্চিন্তা আমাদের শরীরের যেমন অনেক ক্ষতি করে থাকেন, তেমনি ব্রণ ওঠার মূল কারণ। টাই আমাদের দুশ্চিন্তা দূর করতে হবে সবার আগে। দুশ্চিন্তা করে আমাদের আসলে কোন লাভ হয় না ক্ষতির থেকে। তাই এটি থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে।
৬) পুদিনা পাতার ব্যবহার
অতিরিক্ত গরমের কারণে ত্বকে যেসব ফুসকুড়ি এবং ব্রণ হয় সেগুলো দূর করতে পুদিনা পাতা উপকারী। টাটকা পুদিনা পাতা বেটে ব্রণের ওপর লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট এরপর ধুয়ে ফেলুন।
৭) পেঁপে ও চালের গুঁড়ো
অপরিষ্কার ত্বক ব্রণ হওয়ার একটি অন্যতম কারণ। এজন্যই ত্বক পরিষ্কার রাখা খুব জরুরি। এক্ষেত্রে পাকা পেঁপে আপনাকে জাহাজয় করতে পারে, যেমন এক কাপ পাকা পেঁপে চটকে নিন, পাতিলেবুর এক টেবিল চামচ রস এর সাথে মিশিয়ে নিন এবং চালের গুঁড়ো মিশিয়ে নিন প্রয়োজন অনুযায়ী। মিশ্রণটি মুখে লাগান ১৫-২৫ মিনিট মাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। পেঁপের বদলে ঘৃতকুমারীর রস ব্যবহার করতে পারেন ।
৮) ডিমের সাদা অংশ
ডিমের সাদা অংশ ত্বকের খসখসে ভাব দূর করতে সাহায্য করে। তাই রাতে শোয়ার আগে ডিমের সাদা অংশ ব্রণ আক্রান্ত জায়গায় ম্যাসেজ করে রাখতে পারেন। এর সাথে লেবুর রস যোগ করলে সবচেয়ে ভালো হয়। আধ ঘণ্টা রাখার পর ধুয়ে ফেলতে পারেন।
৯)দারুচিনি গুড়া ও গোলাপজল
ত্বকের যত্নে গোলাপ জলের ব্যবহার সম্পর্কে হয়ত সবাই জানেন। তেমনি গোলাপজল নিয়মিত ব্যবহার করে ব্রণের দাগও কমিয়ে আনা যায়। দারুচিনি গুড়া ও গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট ব্রণের ওপর লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রাখার পর ধুয়ে ফেলুন। এতে ব্রণের সব রকমের সমস্যা কমে যাবে।
১০) আপেল এবং মধুর মিশ্রণ
মধুর উপকারিতা সর্বত্র। যা ব্রণের ক্ষত্রেও কম নয়। মধুর সাথে আপেলের মিশ্রণ হচ্ছে ব্রণের দাগ দূর করার সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘরোয়া পদ্ধতি। প্রথমত আপেলের পেষ্ট তৈরি করতে হবে যার সাথে ৫-৬ ফোঁটা মধু মিশাতে হবে। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রাখার পরে এরপর মুখ ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি যেমন ত্বকের টানটান ভাব বজায় রাখে তেমনি গায়ের রঙ হালকা করে। সপ্তাহে ৫-৬ বার এভাবে ব্যবহার করতে পারেন। কিছুদিনের মধ্যেই পরিবর্তন অনুভব করতে পারবেন।
➤এভাবে আপনি ঘরোয়া উপায়ে ব্রণ দূর করতে পারেন। আর নিজেকে দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখুন। মনে রাখবেন দুশ্চিন্তা সকল রোগের মূল কারন।
এছাড়া আপনি চাইলে এমন কোনো প্রাকৃতিক প্রডাক্ট ব্যবহার করতে পারেন যেটা ব্যবহারে আপনআকে ব্রন থেকে মুক্তি দিবে। তবে কেমিক্যাল প্রোডাক্ট থেকে দূরে থাকবেন কারন কেমিক্যাল প্রোডাক্টে আপনার ত্বককে বার্ন করে দিতে পারে। এছাড়াও স্কিন ডিজেস টাইপের অনেক ধরনের প্রবলেম হতে পারে।
আপনি আমাদের সিক্রেট একনিপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন। এতে রয়েছে নানা প্রকার প্রাকৃতিক উপাদান এবং ভেষজের মিশ্রন। যা আপনার ত্বককে ব্রন থেকে দূর করবে এবং ত্বককে করে তুলবে উজ্জল ও মসৃন ।